শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
মুফতি আইয়ুব নাদীম:
মুমিনের কল্যাণময় ভালোবাসার অন্যতম ক্ষেত্র হচ্ছে, মহান আল্লাহর ভালোবাসা। প্রতিটি মুমিন-মুসলমানের হৃদয়ে মহান আল্লাহর ভালোবাসা থাকা ফরজে আইন। ইমান যে পাঁচ স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তার অন্যতম হচ্ছে আল্লাহর ভালোবাসা। হজরত হাসান বসরি (রহ.) সুন্দর বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে জেনেছে, সে আল্লাহর ভালোবাসা ছাড়া বাঁচতে পারে না।’ প্রতিটি মানুষকে যে দুটি কারণে আল্লাহকে ভালোবাসতেই হবে, নিম্নে তা উল্লেখ করা হলোশ্বি
প্রথম কারণ : যার দয়া ও ভালোবাসা, মানুষ পায়, স্বভাবগতভাবেই তাকে ভালোবাসে। দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি মানুষ আল্লাহর এমন অসংখ নেয়ামতরাজি ভোগ করে থাকে, যা পৃথিবীর সব মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেও গণনা করে শেষ করা যাবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা যদি আল্লাহর নেয়ামতগুলো গুনতে শুরু কর, তবে তা গুনে শেষ করতে পারবে না। বস্তুত আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ শ্বিসুরা নাহল : ১৮
বোঝা গেল, আল্লাহতায়ালা মানুষকে এত বিপুল পরিমাণে নেয়ামত দিয়েছেন, যেগুলো গণনা করা মানুষের সাধ্য নেই। যেমনশ্বি ধরুন, আল্লাহ যদি দেখার জন্য দৃষ্টির শক্তি না দিতেন, তাহলে আমরা অন্ধ হতাম। যদি বলার জন্য বাকশক্তি না দিতেন তাহলে বোবা হতাম। শ্রবণের জন্য যদি শ্রবণশক্তি না দিতেন, তাহলে বধির হতাম। যদি হাঁটা-চলার জন্য পা না দিতেন, তাহলে ল্যাংড়া হতাম। যদি সুস্থতা না দিতেন, তাহলে অসুস্থ হতাম। যদি সন্তান না দিতেন, তাহলে নিঃসন্তান হতাম। যদি বসবাসের জায়গা না দিতেন, তাহলে পেরেশন হতাম। এভাবে জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে আল্লাহর অসংখ্য, অগণিত নেয়ামতের ভেতরে ডুবে আছি। তাই যৌক্তিক কারণেই আল্লাহকে ভালোবাসা প্রতিটি মানুষের জন্য ফরজ।
দ্বিতীয় কারণ : আল্লাহ আমাদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক। তার ইচ্ছায় আমাদের বেঁচে থাকা, মরে যাওয়া এবং সুস্থতা, অসুস্থতা। তিনিই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। আমরা অনেক কিছু বলি এক রকম, করি অন্য রকম। ভাবি এক রকম, হয় অন্য রকম। এর কারণ হলো, মানুষ নিজস্ব কর্মে স্বাধীন হলেও তার এই স্বাধীনতা মহান আল্লাহর ইচ্ছার অধীন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যা কিছু ইচ্ছা করেন, তা করে ফেলেন।’শ্বিসুরা বুরুজ : ১৬
বোঝা গেল, আল্লাহ যখন যা ইচ্ছা করেন, তখন তাই করেন, সেখানে বান্দার কোনো ইচ্ছা বা চাওয়া চলে না। হজরত ইবরাহিম (আ.) তার প্রিয় সন্তান ইসমাইলকে কোরবানি করতে চাচ্ছিলেন, আর ছেলেও কোরবানি হতে প্রস্তুত ছিলেন, কিন্তু তাই হলো, যা- আল্লাহ চেয়েছিলেন, ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং (সেটা ছিল এক বিস্ময়কর দৃশ্য) যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং পিতা পুত্রকে কাত করে শুইয়ে দিল। আর আমি তাকে ডাক দিয়ে বললাম, হে ইবরাহিম! তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছ। নিশ্চয়ই আমি সৎকর্মশীলদের এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি।’শ্বিসুরা আস-সাফফাত : ১০৩-১০৫
সুতরাং জরুরি হলো, আল্লাহকে মনেপ্রাণে ভালোবাসা এবং যাবতীয় বিধিবিধানগুলো যথাযথভাবে পালন করা।
ভয়েস/আআ